নিজস্ব প্রতিবেদন
নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান তিনি পুলিশ পরিদর্শক (ডিবি) কামরুজ্জামানের কাছ থেকে ইসলামি ব্যাংকের মাধ্যমে ও বিকাশের মাধ্যমে দফায় দফায় ঘুষ নিয়েছেন। এসপি চাহিদার মত ঘুষ না দেওয়ায় পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে । বিগত ১৫/০৩/২০২৫ খ্রি : তারিখে চ্যানেল-২৪, দৈনিক নিখাদ খবর, নিউজ নরসিংদী-২৪ সহ অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমে উক্ত জব্দকৃত মাদকদ্রব্য সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশিত হয় যে, "বিগত ০৫/০২/২০২৫ খ্রি : তারিখ শিবপুর উপজেলা সৃষ্টিগড় থেকে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক ৯৬ (ছিয়ানব্বই) কেজি গাঁজা উদ্ধার করে আদালতে প্রেরণ করা হয় মর্মে দেখানো হয়। প্রকৃত পক্ষে উক্ত মাদকদ্রব্য আদালতের মালখানায় না নিয়ে বিক্রি করে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়া হয়"- যা সম্পূর্ণ মনগড়া ও মিথ্যা। উল্লেখ্য, জেলা গোয়েন্দা শাখার জি.ডি নং-৭৫, তারিখ ০৪/০২/২০২৫ খ্রি : মূলে জব্দকৃত আলামত ৯৬ (ছিয়ানব্বই) কেজি গাঁজা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নন.জি.আর আদালতের ০৬/০২/২০২৫ খ্রি : তারিখের আদেশ মূলে, ১৬১ নং স্মারকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মালখানা বরাবর প্রেরণ করার আদেশ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে ১৭/০২/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে কোর্ট পুলিশের সহায়তায় জব্দকৃত আলামত হতে ৯৬ কেজি গাঁজা ধ্বংস করার নথি কোর্ট পুলিশ কর্তৃক উপস্থাপন করা হলে আমি নিজে উপস্থিত থেকে উক্ত আলামত আনুমানিক ০৬:১৫ থেকে ৮.৩০ ঘটিকায় তৎকালীন কিছু পুলিশ সদস্য, মালখানার কনস্টেবল, কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর, সংশ্লিষ্ট কোর্টের কর্মচারী, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এবং উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে ধ্বংস করি যা ১৭/০২/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ তারিখের আদালত প্রাঙ্গণের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাবে। কিন্তু বিগত ১৫/০৩/২০২৫ খ্রি : তারিখে চ্যানেল-২৪, দৈনিক নিখাদ খবর, নিউজ নরসিংদী-২৪ সহ অন্যান্য সংবাদে উল্লেখ করা হয় উক্ত আলামত ১১/০৩/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে ধ্বংস করার প্রমাণপত্র তৈরি করা হয় যা প্রকৃতপক্ষে ১৭/০২/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে ধ্বংস করা হয়। নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায় উক্ত সংবাদটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা। গোপন সূত্রে জানা যায় যে তিনি মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় মাদক কারবারিদের সংযুক্তি থাকায় তাকে সেখান থেকে তাকে বদলি করা হয়।
বিগত ১৫/০৩/২০২৫ খ্রি তারিখে মালখানার দায়িত্বরত সাব ইন্সপেক্টর মো. শামিনুর রহমান এবং কনস্টেবল কামরুল নাহার এস,পি অফিসে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন যে জেলা গোয়েন্দা শাখার জি.ডি নং-৭৫, তারিখ ০৪/০২/২০২৫ খ্রি : মূলে জব্দকৃত আলামত ৯৬ (ছিয়ানব্বই) কেজি গাঁজা তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় নাই। তিনি এই বিষয়ে তার দায়িত্বরত মালখানায় এন্ট্রিও করেন নাই এবং তিনি অত্র মাদকটি দেখেন নাই। তাছাড়াও মালখানার দায়িত্বরত কনস্টেবল আরও অভিযোগ করেন মালখানার দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও কোর্ট ইন্সপেক্টরের মৌখিক নির্দেশনায় উক্ত নথিটি উপস্থাপন করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে সেইদিন মালখানার ভারপ্রাপ্ত সাব ইন্সপেক্টর ও কনস্টেবল এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য প্রকাশ্যে নিয়মিত মাদক ধ্বংসের কর্মসম্পাদনের প্রস্তুতিকালে একত্রে আমার কোর্ট প্রাঙ্গণে বিভিন্ন মামলার আনুমানিক ৪৬টি আলামত এবং জিডি মূলে একটি আলামত যা ছয়টি বস্তায় প্রায় ৯৬ কেজি গাঁজা উপস্থাপন করে। একটি একটি করে নথি এবং আলামত তারা পর্যায়ক্রমে আমাকে বুঝিয়ে দেয়। সেইদিন জিডি মূলের ৯৬ কেজি গাঁজা এবং ৪৬টি নথিতে আনুমানিক ৬০/৬৫ কেজি গাঁজা, ইয়াবা এবং চোরাই মদসহ ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত করা হয়। সেই দিন গাঁজার পরিমাণ আনুমানিক ১৫৫/১৬০ কেজির অধিক হওয়ায় এবং মালখানার কিছু পরিত্যক্ত জিনিস থাকায় আমি আদালত প্রাঙ্গণে দুই জায়গায় একই সাথে সোহেল (নাইট গার্ড), ইমন (আউটসোর্সিং নাইট গার্ড), কামরুল নহর (মালখানার কনস্টেবল), নজরুল (মালখানার কনস্টেবল), কোর্ট সাব ইন্সপেক্টর মো. শামিনুর রহমান , জারিকারক হাফিজ উল্লাহ, অফিস সহায়ক খুকি, অফিস সহায়ক সুফিয়ান, পেশকার মকবুলসহ কোর্টের একাধিক স্টাফ, নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য, আইনজীবী এবং উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে ধ্বংসের জন্য নির্দেশ দেই যার আংশিক ছবি ও ভিডিওসহ প্রমাণ রয়েছে। কারণ একসাথে এত বিপুল পরিমাণ গাঁজায় আগুন দিলে উক্ত আগুনের ফুলকি থেকে ন্যায়কুঞ্জ ভবনের বৈদ্যুতিক তারে আগুন লাগতে পারে। উপস্থিত মালখানার পুলিশ সদস্য বিগত ১৫/০৩/২০২৫ খ্রি : তারিখের লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করে তারা এই বিষয়ে জ্ঞাত নয়। এই বিষয়ে তারা তাৎক্ষণিক আমার কাছে বা বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নরসিংদী বা এসপি মহোদয়ের নিকট কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেয় নাই। পক্ষান্তরে তারা সকল নথি সঠিকভাবে উপস্থাপন করে ধ্বংসের কাজ সম্পাদন করে। আমি পত্রিকার সংবাদ মারফত জানতে পারি তিনি তার মালখানার রেজিস্ট্রারে অত্র জিডি মূলের মাদক এন্ট্রি করে নাই। কিন্তু উক্ত বিষয়ে মালখানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য আমাকে অবগত করে নাই। অত্র রেজিস্ট্রার বই সম্পূর্ণ মালখানার পুলিশ দেখভাল করে যা আমার জ্ঞাত হওয়ার সুযোগ নেই। পক্ষান্তরে গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতিতে তারা মাদকটি আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে এবং ধ্বংসের জন্য নথি উপস্থাপন এবং আলামত ধ্বংসের শেষে রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। যথাযথভাবে ধ্বংসের কপি অত্র জিডির আইওকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এর পিছনের কারণ আমি বোধগম্য নয়। আমি অত্র জিডির মাদক ধ্বংসের নথি স্বাক্ষর করার সময় ধ্বংসের অনুমতি পত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাগজ দেখতে পাই। কিন্তু অত্র বিষয়ে বিরূপ নিউজ হওয়ার পর জিডি কপি এবং ধ্বংসের অনুমতি পত্রটি নথিতে সংযুক্ত নেই বলে আমার দৃষ্টিগোচর হয়। উক্ত নথিটি যথাযথ ভাবে উপস্থাপন করার দায়িত্ব মালখানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের যা তারা সেসময়ে যথাযথ ভাবে উপস্থাপন করলেও পরবর্তীতে জিডির ধ্বংসের অনুমতিপত্রটি খোয়া যায়। অত্র নথিটি হেফাজতের দায়িত্ব পুলিশ সদস্যের। জিডির ধ্বংসের অনুমতিপত্রটি খোয়া যাওয়ার পিছনে কারও গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।
গত ১৪/০৩/২০২৫ খ্রি : তারিখে দুপুর ১২.০৬ ঘটিকায় আমার এক পরিচিত ব্যক্তির মারফত আমি জানতে পারি মাদক ধ্বংসের সাথে আমার নাম জড়িয়ে মাজহারুল পারভেজ নামক এক ব্যক্তি ভুয়া খবর প্রচার করতে চাচ্ছে। তিনি আমাকে জানান যে আমি যদি তাকে ঘটনা বুঝিয়ে বলি তাহলে এই ব্যাপারে সংবাদ প্রচার করা হবে না। তার কথামতো আমি মাজহারুল পারভেজকে বুঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু তিনি আমাকে দোষারোপ করতে থাকে। আমি তাকে ব্যাখ্যা দিলে তিনি সন্তুষ্ট হয়েছে মর্মে আমাকে জানান। পরদিন ১৫/০৩/২০২৫ খ্রি : তারিখে দুপুর ৩.৫৮ ঘটিকায় ঐ পরিচিত ব্যক্তি আমাকে পুনরায় জানান যে মাজহারুল পারভেজ এর সাথে যোগাযোগ করে সত্য/মিথ্যা যাই হোক তার সাথে নমনীয় হলে এবং দুঃখপ্রকাশ করলে তিনি আমাকে জড়িয়ে কোন সংবাদ প্রচার করবেন না। আমার ব্যক্তিগত সম্মানহানীর কথা চিন্তা করে আমি মাজহারুল পারভেজকে ফোন দেই এবং তাকে বলি আমার মনের অজান্তেও কোন ভুল করে থাকলে বিষয়টি তিনি যেন বিবেচনায় নেন। তিনি আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভালো থাকবেন বলে ফোন কেটে দেন। কিন্তু মাজহারুল পারভেজ নামক সেই ব্যক্তি আমার অনুমতি ছাড়াই সেই সময় আমার কথা রেকর্ড করে। পরবর্তীতে মাজহারুল পারভেজ মন্টি কোন তথ্য প্রমাণ যাচাই বাছাই ছাড়াই সুকৌশলে আমার কথার রেকর্ডিং এর একাংশ প্রচার করে বিচার বিভাগের সম্মান ক্ষুণ্ন করার প্রয়াস করে। সাংবাদিক মাজহারুল পারভেজ মন্টি তার ভেরিফাইড ফেসবুকে ০৫/০৩/২০২৫ খ্রি : তারিখে মাদক ধ্বংসের একটি ভিডিও প্রচার করে আগুন নিয়ে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে এমন একটি সংবাদ প্রচার করে এবং তার পোস্টে জানায় দুই মাস যাবৎ কোর্ট প্রাঙ্গণে কোনো মাদক ধ্বংস করা হয় নাই যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে প্রায় দুই সপ্তাহ পর পরই মাদক ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি প্রচার করেন মালখানায় বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য আছে কি নাই তার কোন খোঁজ রাখেননি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়। মালখানা যাচাই বাছাই না করেই তিনি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এ মাদকদ্রব্য ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। প্রকৃতপক্ষে জিডিমূলে জব্দকৃত মাদক ধ্বংসের জন্য চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। নন জি আর ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ এবং মালখানার ভারপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি এবং তার আদেশে আলামত ধ্বংস করা হয়। প্রকৃতপক্ষে তিনি সাংবাদিকতার নাম করে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই শোনা কথার উপর ভিত্তি করে সুকৌশলে কথা রেকর্ডিং করে তার পছন্দ মতো কাটছাঁট করে তার মালিকানাধীন সংবাদপত্রে প্রচার করে আমাকে হয়রানি করে। শুধু রেকর্ডিং প্রচারের মাধ্যমে তিনি আমাকে অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করতে চেষ্টা করে।
তার প্রচারিত সংবাদের কারণে আমি অত্যন্ত মানসিক বিপর্যয়ে ভুগছি। তাছাড়াও তিনি আমার ব্যক্তিগত সম্মানহানি ঘটিয়েছে। যার কারণে আমি পরিবারের সাথে স্বাচ্ছন্দ্যে সময় কাটাতে পারছি না। প্রকৃতপক্ষে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। বাস্তবে আমি যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে মাদকটি ধ্বংস করি এবং মাদক ধ্বংসের বিষয়ে প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করিলে তাকে ফোনে পাওয়া যায় না।